খুলনায় শিক্ষার্থী অর্ণবকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা
- By Jamini Roy --
- 25 January, 2025
খুলনায় তেঁতুলতলা মোড় এলাকায় গতকাল শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে অর্ণব কুমার সরকার নামে এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত অর্ণব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার আবু আহম্মেদ সড়কে। তিনি নীতীশ কুমার সরকারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে অর্ণব তেঁতুলতলা মোড়ে একটি চায়ের দোকানের সামনে নিজের মোটরসাইকেলের ওপর বসে চা পান করছিলেন। এ সময় ৪-৫ জনের একদল সন্ত্রাসী তাকে ঘিরে ধরে। তারা প্রথমে অর্ণবকে কুপিয়ে এবং পরে মাথায় গুলি করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন অর্ণবকে উদ্ধার করে খুলনার সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুই রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।
নিহত অর্ণবের পরিবার জানিয়েছে, তিনি কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম বা স্থানীয় বিরোধে জড়িত ছিলেন না। পরিবারের বিশ্বাস, এই ঘটনা পরিকল্পিত হলেও এর কোনো কারণ সম্পর্কে তারা নিশ্চিত নন।
অর্ণবের এক সহপাঠী জানান, তিনি শান্ত ও অমায়িক স্বভাবের ছিলেন। এছাড়া অর্ণব নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক পাস করার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন।
খুলনা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, "এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।"
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং তদন্তের জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছে।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হতে থাকে যে অর্ণব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আহমেদ হামীম রাহাত এ তথ্য অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, "অর্ণব ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি জড়িত ছিলেন না এবং এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই।"
হত্যাকাণ্ডের পর তেঁতুলতলা এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনার পরপরই এলাকাটি নজরদারিতে রেখেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করেছেন। বর্তমানে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে জোর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।